ক্লিক কেন?

খুব সঙ্গত প্রশ্ন। দেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম-এ খুব কম খবরই পাওয়া যাবে যার সঙ্গে কোনো না কোনো ছবি নেই। কোনো কোনো খবরের সঙ্গে একাধিক ছবি থাকে। এর পাশাপাশি ছবিঘর বলে একটি বিভাগও আছে আমাদের সাইটে যেখানে প্রতিদিন সমসাময়িক ছবি এবং ছবির অ্যালবাম পোস্ট করা হয়। তারপরও কেবল ছবিবিষয়ক একটি নিয়মিত প্রকাশনা কি জরুরি ছিল?
সম্ভবত এই মুহূর্তে গোটা পৃথিবীতে যে ইলেকট্রনিক যন্ত্রটি সবধরনের মানুষের হাতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় তার নাম ক্যামেরা। প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদের সাইট গিজমডোর একটি হিসেব অনুসারে বিশ্বে প্রতিদিন ৩০ কোটির বেশি ছবি পোস্ট করা হয় কেবল ফেইসবুকেই। এটি গত জুন মাসের হিসেব। অনুমান করা যায় সংখ্যাটি এখন আরও বেশি।
আলোকচিত্রপ্রীতি কেবল পশ্চিমা বিশ্বে বেড়েছে তা নয়, বেড়েছে বাংলাদেশেও। সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একটি প্রকাশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রামাণ্য আলোকচিত্রি এখন বাংলাদেশে।
বাংলাদেশে আন্তার্জাতিক মানের যত পুরস্কার এসেছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুরস্কার এনেছেন আমাদের আলোকচিত্রিরা। ব্যবধানটি এতই বেশি যে, কেবল ফটোগ্রাফিতেই এ দেশে যত পুরস্কার এসেছে, বাকি সমস্ত পুরস্কার যোগ করলেও সংখ্যাটি সম্ভবত এর সমান হবে না। বাংলাদেশি আলোকচিত্রিরা দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন, করছেন।
বলে রাখা ভালো, এর সবই হয়েছে কেনোরকম রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই, একেবারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে।
এই সাফল্যের হাত ধরেই সম্ভবত দেশের তরুণ প্রজন্মের আগ্রহের জায়গাটি নিয়েছে আলোকচিত্র। ব্যক্তিগত ও পরিবারিক থেকে শুরু করে সামাজিক বা ধর্মীয় আয়োজনগুলোতে ব্যস্ত তরুণ আলোকচিত্রির সংখ্যাই এর সত্যতা জানান দেয়।
সমস্যা হল, বিশালসংখ্যক এই আলোকচিত্রির জন্য কোনো সাধারণ প্ল্যাটফর্ম এতদিন দাঁড়ায়নি, যেখানে একজন আলোকচিত্রি তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন অপর আলোকচিত্রির সঙ্গে বা আলোকচিত্রের কোনো কারিগরি বিষয়ে কেউ পরামর্শ চাইতে পারেন অভিজ্ঞ কারও।
এখন যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম ইন্টারনেট। আর বাংলাদেশের যে ওয়েব পোর্টালটিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ যুক্ত থাকেন সেটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। এটি আবেগ বা বিজ্ঞাপনের কথা নয়, এটি পরিসংখ্যান থেকে নেওয়া তথ্য। ফলে প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের দায়বদ্ধতা থাকে এই যোগাযোগের সুযোগটি কাজে লাগানোর।
আমরা সব আলোকচিত্রির জন্য একটি ভার্চুয়াল আড্ডার জায়গা করতে চাই। আমাদের ইচ্ছে আছে অদূর ভবিষ্যতে এটি কেবল ভার্চুয়ালজগতেই থাকবে না, এর বাইরেও নানারকম আয়োজনের মাধ্যমে এর সম্ভাবনা আমরা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।
সবশেষে বিনীতভাবে বলতে চাই- ক্লিক কেবল বিডিনিউজের প্রকাশনা নয়, আমরা চাই এটি আলোকচিত্রসংশ্লিষ্ট সবার মিলনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠুক।
শুভেচ্ছাসহ,
বিভাগীয় সম্পাদক, ক্লিক